গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন: শ্রমিক নামধারী এরা কারা?

গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন: শ্রমিক নামধারী এরা কারা?

চ্যানেল নিউজ, শুক্রবার, ১০ নভেম্বর-২০২৩ : গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর পরও ভাঙচুর, নাশকতা ও সহিংসতা থামছে না। গতকাল আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সহিংস ঘটনা ঘটেছে। অনেক গার্মেন্টসে শ্রমিকরা যোগদান করে কার্যক্রম চালাচ্ছিল। শ্রমিক নামধারী এক ধরনের লোক গার্মেন্টসে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর ও তান্ডবলিলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান শুরু করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হয়। বেশ কিছুসংখ্যক গার্মেন্টস মালিক বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।
গতকাল দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় তুসুকা গার্মেন্টসে ঢুকে শ্রমিক নামধারী একশ্রেণির নেতাকর্মী ভাঙচুর করেছে। পরে পুলিশ প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলাকারী শ্রমিক নামধারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। এতে কয়েক জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। গার্মেন্টস শ্রমিকরা বলেন, গার্মেন্টসে বেতন বাড়ানোর পর অনেক গার্মেন্টসে শ্রমিকরা যোগদান করেছেন। বেতন বৃদ্ধির পরও যারা সহিংসতা চালাচ্ছেন তারা শ্রমিক না। শ্রমিক নামধারী তারা রাজনৈতিক নেতা। কোনো গার্মেন্টসে কাজও করেন না তারা। কিন্তু তারা চলাচল করেন নামিদামি গাড়িতে, তাদের টাকার উৎস কোথায়? আমরা এখন কাজে যাচ্ছি, তারা বাধা দিচ্ছেন। যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা কারা? বিষয়টি দ্রুত নিরসন করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে শ্রমিকরা বলেন, শ্রমিক নামধারী একশ্রেণির নেতাকর্মী গার্মেন্টসে সহিংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত। শ্রমিক নামধারী এসব নেতার উসকানিতে গতকাল গাজীপুরে ৪০টি গার্মেন্টস বন্ধ করা হয়েছে। সাভারেও বহু গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় কয়েক শতাধিক গার্মেন্টস বন্ধ হলো। আবার কিছু গার্মেন্টস মালিক ‘নো-ওয়ার্ক, নো-বেতন’ ফর্মুলা কার্যকর করে গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ রেখেছেন। তবে নতুন মজুরি কার্যকর হওয়ায় এক গ্রুপ কাজ করছেন। কিন্তু যারা বাধা দিচ্ছেন তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিভিন্ন দেশ তাদের লালন-পালন করে। মোটা অঙ্কের বেতনভুক্ত তারা। এসব নেতার মাধ্যমে শ্রমিক আন্দোলনকে উসকে দেওয়ার জন্য বিদেশিদের ইন্ধন রয়েছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এর সত্যতা পেয়েছেন। ৩৬ জন নেতার তালিকাও গোয়েন্দাদের কাছে রয়েছে।
দেশের বড় অর্থনৈতিক খাত গার্মেন্টস ব্যবসা থেকে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংসে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের শ্রমিক নেতাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন দেশের কাছে এ শিল্পকে তুলে দিতে একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, কারা গার্মেন্টস খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বলেন, বিদেশ থেকে টাকা দিয়ে শ্রমিক নামধারী নেতাদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দেশের গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংস করতে চায় তারা। গার্মেন্টস খাত যাতে বাইরের দেশে চলে যায় সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারা।

সূত্র: ইত্তেফাক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

themesbazartvsite-01713478536