বাংলাদেশটা উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশটা উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

চ্যানেল নিউজ, ঢাকা : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে তৃতীয় দলকে ক্ষমতায় আনতে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিলের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে দেশবাসী।
তিনি বলেন, “নির্বাচন বাতিলের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অনেকে আন্তর্জাতিকভাবেও জড়িত। তারা বাংলাদেশে তৃতীয় পক্ষকে ক্ষমতায় আনার জন্য কাজ করছে। আমরা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দেব।”
আজ সকালে টুঙ্গিপাড়ায় সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আগামী ৭ জানুয়ারি আমাদের নির্বাচন। নৌকা মার্কায় আমরা ভোট করবো। আপনারা সকালে সকলে সশরীরে এসে ভোট দিয়ে এই বিশ^কে দেখাবেন যে এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং আমরা তা করতে জানি ও করতে পারি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আমরা করতে পারি।”
তিনি বলেন, তিনি চান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক।
আওয়ামী লীগ সভাপতি টুঙ্গিপাড়াবাসীর সমর্থনকে নিজের শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তাঁর দায়িত্ব¡ নেওয়ার জন্য তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, আমি ৩ শ’ আসন দেখি। আর আমাকে দেখেন আপনারা। কাজেই এটাই হচ্ছে আমার সব থেকে বড় পাওয়া, আমার মত একজন সৌভাগ্যবান প্রার্থী বাংলাদেশে আর নেই। এটা হলো বাস্তবতা। তার কারণ আপনারা। আপনারাই আমার দায়িত্ব নেন। আপনারা আমাকে দায়মুক্ত কওে রেখেছেন বলেই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করতে পারছি।
“আমি একজন প্রার্থী হিসেবে নৌকা মার্কায় ভোট চাই, ভোট দেবেন তো?”
তাঁর এই প্রশ্নের উত্তরে সমস্বরে চিৎকার করে জনতা দুই হাত তুলে ভোট প্রদানের সম্মতি জানায়। “আমি জানি আপনারা দেবেন,” প্রতিউত্তর দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সোয়া ১১টায় সমাবেশস্থলে পৌঁছান এবং সমাবেশে জাতীয় পতাকা নেড়ে জনতাকে শুভেচ্ছা জানান। সমাবেশটি একটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে বোমা মেরে ফিলিস্তিনে নারী শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে।
রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে (এখানে বাংলাদেশে) একই কাজ করেছে তারেক জিয়া। বাংলাদেশে এ সমস্ত দুর্বৃত্তায়ন চলবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, আল্লাহ যদি দিন দেয় আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে পারলে-ওই লন্ডনে বসে হুকুম দেবে আর দেশের মানুষের ক্ষতি করবে, দেশের মানুষ মারবে সেটা হতে পারে না। দরকার হলে ওটাকে ওখান থেকে ধরে এনে শাস্তি দেওয়া হবে, ধরে এনে শাস্তি দেব।
নির্বাচন বানচাল করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তৃতীয় পক্ষ কী করতে পারে? দেশের কোনো উন্নতি করতে পারে না। ২০০৭-এ আপনারা দেখেছেন কী করেছে। তার আগে তো জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া, এরাই তো ছিল, মানুষের তো কোনো ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি! মানুষ তো যে অন্ধকার-অন্ধকারেই ছিল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।
আওয়ামী লীগ চায় দেশে শান্তি থাকুক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ নিরাপদ থাকুক। দেশের উন্নতি তরান্বিত হোক। আর তারা বারবার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। বারবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কিন্তু এটা করেও তারা সফল হতে পারছে না।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ২০২৬ সালে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে জানিয়ে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই এই যাত্রা সফল করতে পারে। আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ পারবে না। কারণ, বিএনপি-জামায়াতের সে যোগ্যতাই নাই। কারণ, বিএনপি হচ্ছে খুনিদের পার্টি আর জামায়াত হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের পার্টি।
বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখনো বিদেশে কয়েকজন রয়ে গেছে। নূর, রশিদ, ডালিম, মুসলেহ উদ্দিন, রাশেদ এখনো ফেরারি। তাদের আনার জন্য বিদেশের সঙ্গে আমরা আলোচনা চালাচ্ছি, আইনগত ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমি জানি না কেন আমেরিকা সেই খুনি রাশেদকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। কানাডা নূরকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। ডালিম আর রশিদ পাকিস্তান আর লিবিয়াতে যাতায়াত করে। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা আছে ওই খুনিদের ধরে এনে আমরা রায় কার্যকর করবো। জাতির পিতার হত্যাকারীদের রায় আমরা কার্যকর করব। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে আমরা নিয়ে এসেছি। ওদের রায় আমরা কার্যকর করেছি।
এদিকে, শেখ হাসিনার নিজের নির্বাচনী এলাকার এ জনসভায় যোগ দিতে শনিবার (ডিসেম্বর ৩০) ভোর থেকে এ মাঠে জড়ো হন এখানকার মানুষ। ঢাক-ঢোল, বাদ্যযন্ত্রের তালে নেচে-গেয়ে উৎসব করতে করতে নানা রঙের পোশাক পরে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে মাঠে আসেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, সমর্থকরা।
সকাল ১০টা নাগাদ পুরো মাঠ কানায় কানায় ভরে গিয়ে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে জন¯্রােত।
নিজের পিতৃভূমিতে বঙ্গবন্ধু কন্যার আগমনে গোটা গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া-কোটালিপাড়ায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
নৌকার আদলে তৈরী বিশাল মঞ্চে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার জনসভা শেষে কোটালিপাড়ায় যান শেখ হাসিনা। সেখানে একটি নির্বাচনী জনসভায় যোগদান শেষে মাদারীপুরে আরেকটি নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেবেন তিনি। পরে সেখান থেকে ঢাকায় ফিরবেন শেখ হাসিনা।
এর আগে দুই দিনের সফরে গতকাল শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সড়ক পথে বরিশাল যান শেখ হাসিনা। বিকেলে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভায় যোগদান শেষে সন্ধ্যায় নিজের পিতৃভূমিতে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। নির্বাচনী এ সফরে শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে তার ছোট বোন শেখ রেহানা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা।
গত ২০ ডিসেম্বর সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহ পরান (রহ.) এর মাজার জিয়ারত এবং এরপর সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে নির্বাচনী জনসভার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন আওয়ামী লীগ প্রধান।
টুঙ্গিপাড়ার জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, রেড ক্রিসেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন, অভিনেতা মীর সাব্বির, অভিনেত্রী তারিন জাহান প্রমুখ।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের। সঞ্চালনা করেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ।
এখানে শেখ লুৎফর রহমান কলেজ মাঠে আয়োজিত আরেকটি মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নতুন ভোটার ও তরুণদের তার দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “যারা যুবসমাজ ও তরুণ সমাজ এবং প্রথমবার যারা ভোটার হবেন শুধু কোটালীপাড়া টুঙ্গিপাড়া নয় সারা বাংলাদেশের জন্য আমার আহ্বান-নতুন ভোটাররা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সরকার গঠন করার সুযোগ করে দিয়ে বাংলাদেশ যেভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে সেই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ায় তাদের সাহায্য করতে হবে।”
তিনি বলেন, “তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি। সেটাই আমরা বিশ্বাস করি।”
আধুনিক প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তরুণ প্রজন্মকে স্মার্ট ও দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তার সরকার গড়ে তুলবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার, আমাদের অর্থনীতি এবং আমাদের সমাজ ব্যবস্থাও স্মার্ট করে গড়ে তোলা হবে। যেন এই বাংলাদেশ শিক্ষা-দীক্ষা জ্ঞানে-বিজ্ঞানে এবং প্রযুক্তিতে উন্নত সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। কারো কাছে মাথা নত করে নয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় বিএনপি-জামাত জোট মিলে অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা শুরু করেছে। রেলের বগিতে আগুন দিয়ে মা ও শিশুকে পুড়িয়ে মারে। রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে আগুন দেয় বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে-এই দুর্বৃত্ত পরায়ণতা আমাদের বন্ধ করতে হবে।
“যে যেখানে আছেন ওই আগুন যারা দেয় বা মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র যারা করে ওদেরকে ধরিয়ে দিন, উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে দিন, সেটাই আমি আহ্বান জানাবো,” বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশটা উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেজন্যই আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। আর এই সুযোগটা আপনারাই দিয়েছেন, কারণ, নৌকা মার্কায় আমাকে ভোট দিয়ে বারবার নির্বাচিত করেছেন।
তিনি বলেন, আমি জানি আমাদের অন্যান্য এমপিদের নিজের এলাকা নিয়েই পড়ে থাকতে হয় কিন্তু আমার তো এলাকা ৩শ’টা। এই ৩শ’ এলাকাই আমাকে দেখতে হয়। আমি দেখতে পারি কারণ, আমার দায়িত্ব তো আপনারাই নিয়েছেন। আমার নির্বাচন তো আপনারাই করে দেন সবাই মিলে। সেদিক থেকে আমি সবথেকে সৌভাগ্যবান। আমি আজকে সেজন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি বলেন, আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে শুরু করে যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা আমরা দিয়েছি সেগুলো অব্যাহত রেখেই আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি এবং কাজ করে যাব।
তার সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দেশে দারিদ্র্যের হার আমরা অর্ধেকের বেশি কমিয়ে এনেছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আরো কমানো। হতদরিদ্র এদেশে আর কেউ থাকবে না। যেটুকু আছে এখন ৫.৬ শতাংশ, ইনশাআল্লাহ আগামী বার নির্বাচিত হয়ে আসতে পারলে এবং জনগণের সেবা করার সুযোগ পেলে হত দরিদ্র বলে আর কেউ থাকবে না। একেবারে নি¤œ সম্প্রদায় থেকে শুরু করে প্রত্যেকেরই থাকা খাওয়া জীবন জীবিকার ব্যবস্থা আমরা করে দেব।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ- সকল ধর্মের মানুষ তার সমান অধিকার নিয়ে যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে, সেটাই আমরা নিশ্চিত করেছি এবং সেটাই নিশ্চিত থাকবে।
তিনি বলেন, জনগণের অধিকার নির্বাচনের অধিকার। ভোটের অধিকার। ‘আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব,’ এই স্লোগান দিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আজকে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি।
এ দেশকে নিয়ে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আমি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
দেশি-বিদেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের অপবাদ দিতে চেয়েছিল মিথ্যা দুর্নীতির অপবাদ। আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম যে দুর্নীতি কোথায় হয়েছে সেটা প্রমাণ কর। বিশ্ব ব্যাংক সে দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারে নাই। কারণ, কোন দুর্নীতি এখানে হয় নাই। কানাডার ফেডারেল আদালতেও এটা প্রমাণিত হয়েছে।
আমরা নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, পারে নাই। জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণেও এ কথার উল্লেখ ছিল ‘বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’ এবং পারেনি।
তিনি বলেন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র যারা করছে তাদেরও একদিন উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে। তারাও শাস্তি পাবে একদিন। আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কেউ যদি নাক গলাতে আসে আমরা সেটা মেনে নেব না, বাংলাদেশ কখনো মানে নাই। মুক্তিযুদ্ধের সময় পারে নাই, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় আমরা অর্জন করেছি। আজকে অর্থনীতির বিজয় ইনশাল্লাহ সেটাও আমরা একদিন অর্জন করে তাদের দেখাবো যে আমরা পারি। অন্তত দরিদ্রের হার ওই সব বড়লোকদের দেশ থেকে আরো কমিয়ে আমরা আরও উচ্চ মর্যাদায় ইনশাল্লাহ নিয়ে যাবো।
কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসবাসীর কাছে তাঁর কোন দিন ভোট চাইতে হয়নি, উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি প্রার্থী হিসেবে আপনাদের কাছে এসেছি আপনারা আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। আমি সেটাই আপনাদের কাছে আবেদন করছি।
তিনি বলেন, বাবা-মা ভাই সব হারিয়েছি আজকে আপনাদের মাঝে হারানো বাবার স্নেহ হারানো মায়ের স্নেহ হারানো ভাইয়ের স্নেহ পেয়েছি। সেটাই আমার চলার পথের পাথেয়। আপনাদের ভালোবাসা ও সহযোগিতায় এটাই আমার চলার পথের একমাত্র শক্তি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নগেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।
মাদারীপুরের কালকিনিতে সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত আরেকটি মহাসমাবেশে শেখ হাসিনা তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়ে বলেছেন, একমাত্র নৌকাই পারে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে।
তিনি বলেন, “আমি নৌকায় ভোট চাই, কারণ, এটিই একমাত্র দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে। নৌকাই দেশের উন্নয়নের একমাত্র হাতিয়ার।”
কোটালীপাড়ার সমাবেশের মতো তিনি নতুন ভোটারদের কাছেও নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বলেন, তার সরকার তরুণ প্রজন্মকে কম্পিউটার ও আইসিটির যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। যাতে তারা বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টায় সমবেশস্থলে এসে পৌঁছান, যা ততক্ষণে মানব সমুদ্রে পরিণত হয়।
অওয়ামী লীগ সভাপতি মাদারীপুরের তিন আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে জনগণের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন এবং নৌকার পক্ষে ভোট চান।
তিনি ভোটারদের সকাল সকাল ভোট কেন্দ্রে গিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বলেন।
আওয়ামী লীগ প্রধান সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল বিএনপি ও যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াত আগামী সাধারণ নির্বাচন বানচাল করতে চায়।
বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং জনগণকে সুন্দর ও নিরাপদ জীবন প্রদান নিশ্চিত করতে তাঁর সরকারের পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক ভাবেও কেউ কেউ ষড়যন্ত্রে জড়িত। তারা বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়। আমরা তা হতে দেব না।”
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই, তারা দেশের জন্য কিছুই করেনি।
জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াকে খুনি আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা শুধু মানুষ হত্যা ও সম্পদ ধ্বংস করতে জানে।
“তারা কখনো মানুষকে মানুষ বলে মনে করে না। সন্ত্রাসী ও যুদ্ধাপরাধী, বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতি করার কি অধিকার আছে?” সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী সাবেক স্থানীয় সংসদ সদস্য ও যোগাযোগমন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আবুল হোসেনকে পদ্মা সেতু নির্মাণে অবদানের জন্য শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিবাদে তাঁর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে । বিশ^ ব্যাংকের দুর্নীতির ভূয়া অভিযোগ পরবর্তীতে কানাডার ফেডারেল কোর্টেও মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে।
কোন নাম উল্লেখ না করে, নিয়ম বহির্ভূতভাবে ব্যাংকের এমডি’র পদ ধরে রাখার জন্য এক ব্যক্তি এই সকল ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে ছিলেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শাহজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

themesbazartvsite-01713478536